পাবনা

কাগজ-কলমে হাট না হলেও দৈনিক প্রায় অর্ধকোটি টাকার গরু বেচাকেনা

  অনলাইন ডেস্ক ১ ডিসেম্বর ২০২২ , ৯:০৭:২৮

সংযোগ রাস্তার প্রায় ১ কিলোমিটার জুড়ে দু’পাশে গড়ে উঠছে ছোট-বড় প্রায় ৩০ টি  শেড। স্থানীয়দের পাশাপাশি দূরবর্তী এলাকার মানুষ এসব শেড ভাড়া নিয়ে করছেন গরু বেচাকেনা। গরু বিক্রয়ের শর্তে, দিন বা মাসের চুক্তিতে ভাড়া নেওয়া এসব শেডে প্রায় প্রতিদিনই কেনাবেচা হয় লাখ লাখ টাকা দামের গরু। দিন শেষে বিক্রির যোগফল দাঁড়ায় প্রায় অর্ধকোটি টাকা।

কাগজ-কলমে হাট না হলেও পাবনার চাটমোহরের মথুরাপুর স্কুল পাড়ায় (পরিষদ পাড়া) এসব শেডে গরু কিনতে আসেন বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা। এদিকে আশানুরুপ দাম পাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যেও বেড়েছে গরুর খামার গড়ার আগ্রহ। যাদের খামার আছে, তারাও দিনকে দিন এর পরিসর বৃদ্ধি করছেন। অন্যদিকে গরু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় মুদিদোকান, ওষুধ, মোবাইলের ফ্লেক্সি-বিকাশের দোকান, চা-স্টল। এতে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফিরছে স্থানীয় অনেকের। পরিবর্তিত হয়েছে এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থা।

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, এক সময় শুধুমাত্র হাটবারে গরু কেনাবেচা হত মথুরাপুর হাটে। কিন্তু সাপ্তাহিক এ হাট এখান থেকে অমৃতকুন্ডা (রেলবাজার) স্থানান্তরিত হওয়ার পর হতে স্থানীয়রা মথুরাপুর হাটের আশপাশে শেড গড়ে তোলেন। সেখানে লালনপালনের পাশাপাশি স্বল্প পরিসরে বিক্রয়ও শুরু করেন তারা। পরবর্তীতে এর প্রসার ঘটেছে, বলা যায় হাটে পরিণত হয়েছে মথুরাপুর স্কুল পাড়া (পরিষদ পাড়া)।

জানা যায়, এখান থেকে কেনা গরু দেশের যে কোনো প্রান্তেই সহজে নিয়ে যাওয়া যায়। বিক্রয় করা গরু দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিতে গড়ে উঠেছে পিকআপ বন্দোবস্তকারী অফিসও। সেখানে নিবন্ধিত প্রায় ২০টি পিকআপ গরু পরিবহন করে থাকে। গ্রাম পুলিশ মজিবর জানান, মথুরাপুর গরুর শেডে সপ্তাহে কয়েক কোটি টাকার গরু কেনাবেচা হয়। মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহ্ আলম বলেন, ‘বাহিরের ক্রেতারা এখানে ভালো মানের গরুর  আস্থা পান বলেই এখানে গরু কিনতে আসেন। আমাদের উচিত হবে এটাকে ধরে রাখা।’

চুয়াডাঙ্গার গরুর ক্রেতা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এখানকার গরুর মান ভালো। আমরা বিক্রেতার তথ্য যাচাই করে গরু ক্রয় করি। এখান থেকে প্রতিটি গরু দেড় থেকে আড়াই লাখ টাকায় বেচাকেনা হয়।’

গরুর খামারী ও ব্যবসায়ী সুজন বলেন, ‘সরাসরি গরু বিক্রির সাথে সাথে অনলাইনেও বিক্রি চলছে সমানতালে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনলাইনে (ফেসবুক,ইউটিউব) দেখে গরু অর্ডার করে ক্রেতারা। অর্ডারকৃত গরু কখনো আমরা দায়িত্ব নিয়ে পৌঁছে দেই, কখনো ক্রেতা নিজেরা এসে নিয়ে যায়।’ সুজন আরো জানান, ‘এখানে হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান, জার্সি, মুন্ডি, অস্ট্রেলিয়ানসহ দেশী-বিদেশী বিভিন্ন উন্নতজাতের গাভী গরু বিক্রি করা হয়। শাহীওয়াল বাছুর গরু সিজোনাল বিক্রি হয়। একেকটা গরু দেড় থেকে আড়াই লক্ষ টাকা বিক্রি হয়। দেশের বিভিন্ন খামারীরা অগ্রিম অর্ডারও দিয়ে রাখেন।’