দেশজুড়ে

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ আজ

  নিউজ ডেস্ক ২৫ মে ২০২৩ , ৭:৩৭:১১

গাজীপুর সিটি করপোরেশন (জিসিসি) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ আজ বৃহস্পতিবার (২৫ মে)। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। এই নির্বাচনে এবারই প্রথম ইভিএমে ভোট দেবেন নগরবাসী। আজ এই সিটিতে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন ৩৩২ জন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী।

দেশের বৃহত্তম এই সিটি করপোরেশনে গত মঙ্গলবার মধ্য রাতে শেষ হয়েছে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা। কে হচ্ছেন এই নগরের পিতা- এখন তা নিয়ে চলছে ভোটারদের মধ্যে আলোচনা। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরাও কষছেন ভোটের হিসাব-নিকাশ। তবে নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান ও আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে গাজীপুরের সব কেন্ত্রে পৌঁছে গেছে ইভিএম মেশিনসহ নির্বাচনি সরঞ্জাম। কেন্দ্রে থাকছে সিসি ক্যামেরা। যা নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে মনিটরিং করা হবে জানিয়ে নির্বাচন কমিশন বলছে, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব ব্যবস্থাই সম্পন্ন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও শেষ করেছে সবশেষ প্রস্তুতি। সব মিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণের জন্য প্রস্তুত গাজীপুর।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন ৮ জন, সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন প্রার্থী। এর মধ্যে সাধারণ ওয়ার্ডে একজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ২৫মে নির্বাচনে লড়বেন ৩৩৩ জন প্রার্থী। ৫৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২হাজার ৭৪৭জন, মহিলা ভোটার ৫লাখ ৮৬হাজার ৬৯৮জন ও হিজড়া ভোটার আছে ১৮জন। ৪৮০টি ভোট কেন্দ্রে এ ভোট গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যেই ১০ হাজার ৯৭১ জন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। আজ সকাল থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনি মালামাল পাঠানো শুরু হবে।

নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্র ও আশপাশে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায়ের স্বার্থে র‌্যাব পুলিশের পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে বিজিবি।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ৩৫১টি কেন্দ্র (দুই-তৃতীয়াংশের বেশি), আর ১২৯টিকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ৫৭টি ওয়ার্ডে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন ৭৬ জন, সঙ্গে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটও থাকবেন। র‌্যাবের ৩০টি টিম থাকবে। বিজিবির থাকবে ২০টি প্লাটুনে প্রতিটিতে ২০ জনের বেশি সদস্য থাকবেন। এ ছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স পুলিশের ১৯টি ও মোবাইল টিম হিসেবে ৫৭টি টিম থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য ১৭ ও সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন সদস্য থাকবেন।

নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম গণমাধ্যমে জানান, সাধারণ ভোটকেন্দ্রে একজন অস্ত্রসহ এসআই/এএসআই একজন, তিনজন কনস্টেবল, অস্ত্রসহ একজন আনসার (পিসি), অস্ত্রসহ ১জন (এপিসি), ১০ জন আনসার সদস্য সহ মোট ১৬ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী লোক নিয়োগ থাকবে। পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ান আনসার এর সমন্বয়ে প্রতি সাধারণ ওয়ার্ডে ১টি করে মোবাইল ফোর্স, ৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স, প্রতি থানায় একটি করে রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। প্রতি ২ ওয়ার্ডে একটি করে র‌্যাবের টিম ও ৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে এক প্লাটুন করে বিজিবি নিয়োজিত থাকবে। এছাড়াও কেন্দ্র অনুযায়ী থাকবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ভ্রাম্যমাণ আদালত টিম।

মেয়র পদে লড়ছেন যারা

নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ এরশাদ, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম।

স্বতন্ত্র মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ এবং হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম।

এদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়। এদিন সব ব্যাংকও বন্ধ থাকবে।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের ৬ জুলাই। দ্বিতীয় সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ২৬ জুন। এবার তৃতীয়বারের মতো এ সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২৫ মে।