বিশেষ প্রতিবেদন

তাড়াশে জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় শিশুদের বেস্ট প্রাকটিস

  আশরাফুল ইসলাম রনি, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) : ২৪ মে ২০২৩ , ১১:১৩:৩১

চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বিল,খাল ও নদী-নালা বছরের বেশীরভাগ সময় পানিশুন্য থাকে। এই মৌসুমে প্রচন্ড খরা ও তাপদাহের কারনে এ অঞ্চলের পানির লেয়ার অনেক নিচে যায়। অনেকের টিউবওয়ালে পানিও উঠেনা।

এ দিকে বিবেচনা করে উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের শিংপাড়া গ্রামে গ্লোবাল ফান্ড ফর চিলড্রেন এর সহযোগিতায় স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট ফর ডিজএ্যাডভান্টেজড পিপল (ডিডিপি) ‘জয়ফুল লার্নিং স্কুল’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।এই প্রকল্পের শিশুদের বিভিন্নভাবে ও আনন্দময়ভাবে শিক্ষাদান করা হচ্ছে। এই স্কুলের সকল নৃ-গোষ্ঠির শিক্ষার্থীদের ছোট থেকেই জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব সম্পর্কে ধারনা দেয়া হচ্ছে এবং কিভাবে জলবায়ুর অভিযোজন করা যায় সে বিষয়ে শেখানো হচ্ছে। এখানে পানির সংকট আছে এমনকি অনেকের বাড়ীতে পানির কল নেই। এজন্য পানির প্রয়োজনীয়তা বোঝানো হচ্ছে ও পানি সংরক্ষনের জন্য তাদেরকে আগামী দিনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট ফর ডিজএ্যাডভান্টেজড পিপল (ডিডিপি) জয়ফুল লার্নিং স্কুল নামে একটি প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি শিশুর বাড়ীতে কলের নিচে একটি করে রিসাইকেলিং ম্যাটেরিয়ালসে তৈরি বালতি রাখা আছে। সারাদিনে অনেকবার কল থেকে পানি নেয়ার প্রয়োজন হয় আর প্রতিবার পানি নেয়ার পরেও অনেক পানি অপচয় হয়। এজন্য কল থেকে অনবরত পড়া সেই পানিটি উক্ত বালতিতে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এই পানি পরবর্তীতে গৃহস্থালি কাজে এবং নিজেদের লাগানো সব্জি বাগানে ব্যবহার করা হচ্ছে।

জয়ফুল লার্নিং স্কুলের শিক্ষার্থী শ্রী ভক্ত (৮) বলেন, আমরা এখন আর পানি নষ্ট করিনা। প্রতিদিন ৩/৪ বালতি করে পানি জমে আমাদের বালতিতে।

আরেক শিক্ষার্থী সুষমা (১০) বলেন, পরিবেশ যাতে ঠান্ডা থাকে এবং ঝড় থেকে যাতে আমাদের বাড়ী রক্ষা পায় সেজন্য স্কুল থেকে আমাদের গাছ ও বিভিন্ন শাকসবজির বীজ দিয়েছে। আমরা এগুলো লাগিয়েছি ও নিজেরাই যত্ন করি।

ডিডিপি’র নির্বাহী পরিচালক কাজী সোহেল রানা বলেন, আমরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে শিশুদের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন সবজি বীজ শিশুদের মাঝে বিতরন করেছি। এছাড়া বৃক্ষ রোপনের অংশ হিসেবে ফলজগাছ বিতরন করেছি। আমরা শিশুদেরকে শিক্ষার পাশাপাশি পরিবেশ বান্ধব মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। প্রতিদিন প্রতিটি শিশুর বাড়ীতে পানি জমানোর পাত্রে প্রায় ১০০ লিটারের মত পানি জমে। যা তাদের প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করছে। জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় এখানে শিশুদের পাশাপাশি আমাদের কিছু যুব ফোরাম আছে যারা এই কমিউনিটির জন্য স্থানীয় সরকারের সাথে এ্যাডভোকেসি করে।

উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিলুর রহমান হাবীব বলেন, আমি সত্যিই অবাক হয়েছি যে এতো সুন্দর একটি উদ্যোগ দেখে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে আমরা প্রতিনিয়ত নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হই। আমার ইউনিয়নের অনেক জায়গায় পানির লেয়ার অনেক নিচে চলে গেছে। পানির সদ্ব্যবহার জরুরী একটি কাজ যা শিশুরা ছোট বেলা থেকেই চর্চা করছে।