একাদশ শ্রেণিতে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে চূড়ান্ত ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আজ সোমবার (১৫ জুলাই) থেকে। একযোগে দেশের সব কলেজে এ ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে আগামী ২৫ জুলাই পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে একজন শিক্ষার্থীকে অনলাইনে আবেদন করে যে কলেজে নির্বাচিত হয়ে ফি জমা দিয়ে নিশ্চায়ন করেছেন, তাকে সশরীরে সেই কলেজে গিয়ে ভর্তি হতে হবে। ভর্তি শেষে অনুষ্ঠানিকভাবে সারাদেশে একযোগে ক্লাস শুরু হবে আগামী ৩০ জুলাই।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও একাদশে ভর্তির ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ভর্তি ফি পরিশোধসহ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন করে একাদশে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে তার নির্বাচিত কলেজের বিজ্ঞপ্তি ও নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ভর্তি নীতিমালা মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ফি আদায়ের নির্দেশনাও দিয়েছে শিক্ষা বোর্ড।
বোর্ড সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীকে তার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার মার্কসশিট সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। তাছাড়া অনলাইনে আবেদন করে কলেজ পাওয়ার পর নিশ্চায়ন করে চূড়ান্ত নির্বাচনের যে পিডিএফ কপি দেওয়া হয়েছে, তা ডাউনলোড দিয়ে প্রিন্ট করে সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।
কোন কলেজে ভর্তি ফি কত
ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী—এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে ৫ হাজার টাকা, মেট্রোপলিটন (ঢাকা ছাড়া) বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে ৩ হাজার টাকা, জেলায় ২ হাজার টাকা এবং উপজেলা ও মফস্বলে দেড় হাজার টাকা।
অন্যদিকে, নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা ভার্সনে সাড়ে ৭ হাজার টাকা, ইংরেজি ভার্সনে সাড়ে ৮ হাজার টাকা, মেট্রোপলিটন (ঢাকা ছাড়া) বাংলা ভার্সনে ৫ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ৬ হাজার টাকা, জেলায় বাংলা ভার্সনে ৩ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা এবং উপজেলা ও মফস্বলে বাংলা ভার্সনে আড়াই হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে তিন হাজার টাকা।
ভর্তির পর কলেজ পরিবর্তনের নিয়ম
সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের পূর্বানুমতি ছাড়া একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির পর কোনো শিক্ষার্থীরা ছাড়পত্র (টিসি) ইস্যু করা যাবে না। কিংবা বোর্ডের পূর্বানুমতি ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক ইস্যুকৃত ছাড়পত্রের বরাতে ভর্তি করা যাবে না। ছাড়পত্রের (টিসি) মাধ্যমে ভর্তির ক্ষেত্রে কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে এ ধরনের ভর্তিকৃত ছাত্রছাত্রী ভর্তির ১৫ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন ফিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে জমা দিতে হবে।
তিন ধাপে আবেদন শেষেও ১২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী কলেজ পাননি। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীও রয়েছে ৭০০ জনের মতো। তাদের ভর্তির ব্যাপারে আবারও আবেদনের সুযোগ দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। এদিকে কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, তিন ধাপে আবেদনের পরও আমাদের ১২ হাজারের মতো শিক্ষার্থী কলেজ বরাদ্দ পাননি।
তিনি বলেন, আসন ফাঁকা নেই বলে তারা কলেজ পাননি, ব্যাপারটা এমন নয়। তারা পছন্দক্রম দিয়েছেন কম। যেসব কলেজ পছন্দক্রমে দিয়েছেন, সেগুলোতে আসন ফাঁকা না থাকায় তাদের কোনো কলেজে নির্বাচিত করা হয়নি। কলেজবঞ্চিতদের জন্য অনলাইনে আবারও আবেদন নেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা আলোচনা করে ব্যবস্থা করা হবে। আমরা চাই সব শিক্ষার্থী ভর্তি হোক।’
চলতি বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১১টি শিক্ষা বোর্ডে পাস করেন ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। ফল পুনঃনিরীক্ষণে আরও প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী ফেল থেকে পাস করেন। তবে সারাদেশে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিযোগ্য আসন রয়েছে ২৫ লাখের মতো। সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও একাদশ শ্রেণিতে ৮ লাখের বেশি আসন ফাঁকা থাকার কথা।
চলতি বছর এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় ১১টি শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। সারা দেশে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিযোগ্য আসন আছে ২৫ লাখের মতো।