দেশজুড়ে

চলনবিল এলাকায় শতকোটি টাকার লিচু বিক্রির সম্ভাবনা

  আশরাফুল ইসলাম রনি, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) : ১৭ মে ২০২৩ , ১২:৪১:৪৯

চলনবিল এলাকায় এবছর লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বৃষ্টিপাত না থাকায় লিচুর কিছুটা ক্ষতি হলেও এবছর লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে বলে বাগান মালিকেরা জানিয়েছেন। খুচরা ও পাইকারী বাজারে কৃষক ভাল দাম পাওয়ার মধ্য দিয়ে কেনা বেচায় জমে উঠেছে এ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থায়ী ও অস্থায়ী লিচু বিক্রির আড়ত। আর আড়তগুলো প্রতিদিন কোটি টাকার লিচু বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

কৃষি অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, নাটোরের গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম সিংড়া, পাবনার চাটমোহর ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার লিচুর আড়তে সব মিলে গড়ে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার লিচু বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

এরই মধ্যে চলনবিল অধ্যুষিত নাটোর জেলার গুরুদাসপুর, সিংড়া, উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বেড়গঙ্গারামপুর বটতলা, মামুদপুর, নাজিরপুর, মশিন্দা, সিরাজগঞ্জের তাড়াশের নাদোসৈয়দপুর, ধামাইচ হাট এলাকার ১২-১৫টি লিচুর আড়ত এ খুচরা ও পাইকারী দরে কেনা-বেচাজমে উঠেছে।

কৃষক বোরহান মন্ডল জানান, লিচুর আবাদে সহনীয় তাপমাত্রার চেয়ে এ বছর বেশী গরম থাকায় অনেকের কৃষকের বাগানের লিচু ফেটে নষ্ট হয়েছে। তারপরও বোম্বাই, চায়না-৩ ও মোজাফ্ফর জাতের লিচুর ফলন মোটামুটি ভাল হয়েছে। তিনি জানান, বোম্বাই জাতের লিচু প্রতি হাজার বিক্রি হচ্ছে ১৫শ’-১৭শ’ টাকা, চায়না-৩ জাতের লিচু প্রতি হাজার ৩ হাজার ৫শ’ থেকে ৪ হাজার টাকা ও মোজাফ্ফর জাতের লিচু প্রতি হাজার ১৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকা করে বিক্রী হচ্ছে।

গুরুদাসপুর লিচু আড়তদার মালিক সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মোকামে শতাধিক আড়তে সারাদিন লিচু পাইকারি বেচাকেনা হয়। এসব লিচু আবাদ ও বেচাকেনায় প্রতিদিন প্রায় সাত হাজার শ্রমিক করেন। চলতি বছর আবহাওয়ার তাপমাত্রা ৩০-৩২ ডিগ্রির মধ্য থাকলে লিচুর ফলন আরও বেশি হতো বলে জানান তিনি।

আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম জানান, চলনবিলের আড়ৎগুলোতে থেকে প্রতিদিন দিন রাত মিলে গড়ে ১০০ থেকে ১৫০টি ট্রাক বোঝাই করে রাজধানী ঢাকাসহ পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঈাইল, চট্রগ্রাম, সিলেট, নোয়াখালী, কুমিল্লা, বরিশাল, হবিগঞ্জসহ অভ্যান্তরীণ অনেক জেলা থেকে লিচু ক্রেতা পাইকাররা চলনবিলের আড়ত থেকে লিচু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।প্রতি হাজার লিচু এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার ২০০ পর্যন্ত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ বছর কমপক্ষে ১০০কোটি টাকার লিচুবেচাকেনা হবে এ মোকাম থেকে।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলায় ১৩ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। শুধু তাই নয় চলনবিলে এক দশকে লিচুর আবাদও প্রসারিত হয়েছে অনেক। চলতি বছর তাপমাত্রা কিছু বেশী থাকায় প্রথম দিকে লিচুর সামান্য সমস্যা হলেও চলনবিলের কৃষক পাইকারী ও খুচরা বাজারে লিচুর ভাল দামও পাচ্ছেন।