জাতীয়

বিশ্ব নারী দিবস আজ

  নিউজ ডেস্ক ৮ মার্চ ২০২৩ , ৮:৪৪:৩৭

‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’- প্রতিপাদ্য সঙ্গে নিয়ে আজ বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হবে নারী দিবস। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ, নারী-পুরুষের সমঅধিকার নিশ্চিত করা, নারীর কাজের স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য উদযাপনের উদ্দেশ্যে নানা আয়োজনে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় দিনটি। 

তথ্যপ্রযুক্তির উপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরি করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে নারীকে অনুপ্রেরণা জোগাতে এই বছরের নারী দিবসের স্লোগান নির্বাচন করা হয়েছে। স্লোগানের তাৎপর্য তুলে ধরে জাতিসংঘ বলছে, বর্তমানে আমাদের জীবন শক্তিশালী প্রযুক্তিগত একীকরণের উপর নির্ভর করে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের যেকোনো কাজ যেমন প্রিয়জনকে কল করা, ব্যাংক লেনদেন করা বা একটি মেডিক্যাল অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করা সবকিছু একটি ডিজিটাল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। তা সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী ৩৭ শতাংশ নারী ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না। পুরুষদের তুলনায় ২৫৯ মিলিয়ন নারীর ইন্টারনেটে কম প্রবেশাধিকার রয়েছে।

এ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। এ বাণীতে তারা বিশ্বের সকল নারীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ উপলক্ষে আজ বেলা আড়াইটায় এক শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে।

মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি থাকায় এবছর নির্ধারিত সেমিনারটি পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত হবে।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরই সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় নানা আয়োজন। তবে এ বছর ৮ মার্চ শবে বরাত উপলক্ষে সরকারি ছুটি। তাই কর্মসূচিতেও কাটছাঁট করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এই দিনটির শুরু ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি সুচ কারখানার নারী শ্রমিকেরা দৈনিক শ্রম ১২ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে আট ঘণ্টায় আনা, ন্যায্য মজুরি এবং কর্মক্ষেত্রে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন। আন্দোলন করার অপরাধে সেসময় গ্রেফতার হন বহু নারী। কারাগারে নির্যাতিত হন অনেকেই। তিন বছর পরে ১৮৬০ সালের একই দিনে গঠন করা হয় ‘নারীশ্রমিক ইউনিয়ন’। ১৯০৮ সালে পোশাক ও বস্ত্রশিল্পের কারখানার প্রায় দেড় হাজার নারীশ্রমিক একই দাবিতে আন্দোলন করেন। অবশেষে আদায় করে নেন দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করার অধিকার। ১৯১০ সালের এই দিনে ডেনমাকের্র কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক সম্মেলনে জার্মানির নেত্রী ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই সারা বিশ্বে দিবসটি আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারীবর্ষে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করা শুরু করে। এর দুই বছর পর ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। নারী দিবস হচ্ছে সেই দিন, যেই দিন জাতিগত, গোষ্ঠীগত, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক কিংবা রাজনৈতিক সব ক্ষেত্রে বৈষম্যহীনভাবে নারীর অর্জনকে মর্যাদা দেবার দিন। এদিনে নারীরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাসকে স্বরণ করে এবং ভবিষ্যতের পথ পরিক্রমা নির্ধারণ করে, যাতে আগামী দিনগুলো নারীর জন্য আরও গৌরবময় হয়ে ওঠে।