কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, সমবায় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক ঝর্ণা প্রভা দেবীর হাতে চেক তুলে দেন। ছবি : সংগৃহীত
কৃষিঋণের মামলায় আটকের পর জামিনে মুক্ত পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ৩৭ প্রান্তিক কৃষককে ব্যাংকঋণ থেকে দায়মুক্ত করল বসুন্ধরা গ্রুপ।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড (ইডাব্লিউএমজিএল) কনফারেন্সরুমে শুভসংঘের আয়োজনে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড কর্তৃপক্ষকে সেই ঋণের ১৪ লক্ষাধিক টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়। বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ পরিচালক ইমদাদুল হক মিলন বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক ঝর্ণা প্রভা দেবীর কাছে চেক হস্তান্তর করেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক (পরিদর্শন ও আইন) মো. আহসানুল গনি ও সহকারী মহাব্যবস্থাপক (আইন) আমিনুল ইসলাম রাজীব প্রমুখ।
চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘২০১৬ সালে পাবনার ঈশ্বরদীর ৩৭ জন কৃষক ঋণ নিয়েছিলেন। একাধিকবার তাগিদ দেওয়ার পর সেটা পরিশোধ করতে পারেননি। নিশ্চয়ই সেই কৃষকদের নানান অসুবিধার কারণেই সেটা পারেননি। একপর্যায়ে ইন্টারেস্টসহ টাকাটা বড় অঙ্কে চলে এসেছে। এর মধ্যে মামলা হয়েছে, ১২ জন কৃষককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। সেটা যখন আমাদের কাগজে সংবাদ এলো। তার পরপরই আমরা বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে আইনি সহায়তা দিয়ে তাদের জামিনে মুক্ত করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় ৩৭ কৃষকের সেই ঋণের টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে।
চেক হস্তান্তরের সময় বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক ঝর্ণা প্রভা দেবী বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপকে প্রান্তিক পর্যায়ে ৩৭ কৃষকের ঋণ পরিশোধ করে তাদের নতুন জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। কৃষকদের জন্য তাদের এই সহায়তা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যত দ্রুত সম্ভব সেই কৃষকদের মামলা প্রত্যাহার করা হবে। তাদের আর কোনো ধরনের হয়রানি করা হবে না।
এর আগে ৩০ নভেম্বর ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী গ্রামে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই ভুক্তভোগী ৩৭ জন কৃষককে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে জনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে ৩৭ জন প্রান্তিক কৃষক গ্রুপ ভিত্তিতে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক থেকে জনপ্রতি ২৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নেন। ঋণ খেলাপের দায়ে ২০২১ সালে ব্যাংকের পক্ষে তখনকার ব্যবস্থাপক সৈয়দ মোজাম্মেল হক মাহমুদ বাদী হয়ে ৩৭ জনের নামে মামলা করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার ১২ জনসহ পরোয়ানা থাকা ৩৭ কৃষকেরই আইনি সহায়তাসহ ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব নেয় বসুন্ধরা গ্রুপ। এরপর কারাগারে যাওয়া ১২ জনসহ ৩৭ কৃষকই জামিন পেয়েছেন। জামিনের পর ২৭ নভেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পান গ্রেপ্তার হওয়া ১২ কৃষক।