সবুজ আলো ডেস্ক 7 April 2023 , 3:21:49
মিরপুর শের-ই বাংলা ক্রিকেটে স্টেডিয়ামে আইরিশদের দেওয়া ১৩৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে মুশফিকুর রহিমের অপরাজিত ফিফটিতে ২৭ ওভার ১ বল খেলে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ছিল ৩৬৯ রান। আয়ারল্যান্ড নিজেদের প্রথম ইনিংসে করেছিল ২১৪ রান, আর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯২ রানে থেমেছিল আইরিশরা।
চতুর্থ দিনের শুরুতেই আইরিশদের ২ উইকেট দ্রুত তুলে নেন পেসার এবাদত হোসেন। ফলে সফরকারীদের মাত্র ১৩৭ রানের লিডে আটকে ফেলে বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়া করতে ওপেনিংয়ে তামিমকে সঙ্গী হয়ে মাঠে নামেন লিটন।
লোয়ার অর্ডার থেমে ওপেনিংয়ে প্রমোশন পেয়ে শুরু থেকেই আক্রমণ চালান লিটন। টি-টোয়েন্টি স্টাইলে লিটনের ১৯ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কার ইনিংস ২৩ রানে থেমে যায়। তাকে অদ্ভুত এক বাউন্সারে বোল্ড করে ফেরান পেসার মার্ক এডেয়ার।
নাজমুল শান্তও রানে ফিরতে না পেরে ম্যাকব্রাইনের বলে মাত্র ৪ রান করে স্লিপে ধরা পড়েন। প্রথম ইনিংসে গোল্ডেন ডাক মারেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তবে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিমের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে জয়ের পথে এগিয়ে যায় টাইগাররা।
এসময় বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৪ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তামিম ইকবাল। তার ঠিক পরেই সেই এলিট ক্লাবে যোগ দেন মুশফিকু নিজেও। তাদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৮৯ রানে লাঞ্চ বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।
তবে বিরতি থেকে ফিরে তামিম বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি। দলের রান একশ ছাড়ানোর পর আক্রমণে উঠতে গিয়ে বিদায় নেন। সাজঘরে ফেরার আগে ৩১ রান করেন ড্যাশিং এই ওপেনার। এরপর বাকি কাজটুকু সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হককে নিয়ে একাই সেরেছেন মুশফিক।
প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর মিস্টার ডিপেন্ডেবল এবারও তুলে নেন ব্যাক্তিগত হাফ সেঞ্চুরি। এতে মুমিনুলের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে সহজেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। জয়সূচক রানটি আসে মুশির ব্যাট থেকে।
এর আগে ৮ উইকেটে ২৮৬ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করে মাত্র ৬ রান করতেই ইনিংস শেষ হয়ে যায় আইরিশদের। ইনিংস হার ম্যাচে ফেরানো অ্যান্ডু ম্যাকব্রাইন ও গ্রাহাম হিউমকে আউট করে আইরিশদের কফিনে শেষ পেরেক মারেন পেসার এবাদত হোসেন।
গত মঙ্গলবার টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। হ্যারি টেক্টরের ফিফটির পরও স্পিনার তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণি জাদুতে ২১৪ রান অলআউট হয়ে যায় আইরিশরা। টাইগার বাঁহাতি এই স্পিনার একাই নেন ৫ উইকেট।
জবাবে টাইগাররা প্রথম ইনিংসে করেছিল ৩৬৯ রান। মুশফিকুর রহিম ১২৬, সাকিব ৮৭ ও মেহেদি মিরাজ ৫৫ রান করেন। আইরিশদের হয়ে ৬ উইকেট শিকার করেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (চতুর্থ দিন)- বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ২৭.১ ওভারে ১৩৮/৩ (লক্ষ্য ১৩৮) (মুমিনুল ২০*, মুশফিক ৫১*; তামিম ৩১, শান্ত ৪, লিটন ২৩)
আয়ারল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৬ ওভারে ২৯২/১০ (হোয়াইট ০*; হিউম ১৪, ম্যাকব্রাইন ৭২, মা. অ্যাডায়ার ১৩; টাকার ১০৮, টেক্টর ৫৬, মুর ১৬, ক্যাম্ফার ১, বালবির্নি ৩, ম্যাককলাম ০, কমিন্স ১; তাইজুল ৪/৯০, ইবাদত ৩/৩৭)
বাংলাদেশ- প্রথম ইনিংসে ৮০.৩ ওভারে ৩৬৯/১০ (মুশফিক ১২৬, সাকিব ৮৭, মিরাজ ৫৫, লিটন ৪৩, তামিম ২১, মুমিনুল ১৭, তাইজুল ৪, শরিফুল ৪, ইবাদত ০, নাজমুল হোসেন শান্ত ০; ম্যাকব্রাইন ৬/১১৮)।
আয়ারল্যান্ড- প্রথম ইনিংসে ৭৭.২ ওভারে ২১৪/১০ (টেক্টর ৫০, ক্যাম্ফার ৩৪, মা. অ্যাডায়ার ৩২, ম্যাকব্রাইন ১৯, বালবির্নি ১৬, ম্যাককলাম ৭, কমিন্স ৫, মুর ১; তাইজুল ৫/৫৮)।
ফলাফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: মুশফিকুর রহিম