‘ঈশ্বরদীর সেই কৃষকরাই দায়ী, ঋণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত চলবে মামলা’

কিন্তু ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত নয়। তিনি বলেন, ‘মামলা মামলার গতিতে চলবে। কৃষকরা অথবা অন্য কেউ যদি টাকা পরিশোধ করেন তাহলে মামলা প্রত্যাহার হবে, না হলে মামলা চলবে।’তদন্ত কমিটির এই প্রধান বলেন, ‘ভাড়ইমারি উত্তরপাড়া সবজি চাষি সমবায় সমিতির ৪০ জন কৃষককে ২০১৬ সালে ১৬ লাখ টাকা ঋণ দেয়া হয়। এক একজন কৃষক ঋণ পান ৪০ হাজার টাকা। নির্ধারিত সময় ঋণ ও সুদের টাকা পরিশোধ না করায় সমিতির ৩৭ জন কৃষকের বিরুদ্ধে মামলা করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।’ তবে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন অভিযুক্ত কৃষকরা। সমিতির সভানেত্রী বিলকিস আক্তার বলেন, ‘আমরা ১৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ১৩ লাখ টাকা শোধ করেছি। কিন্তু উনাদের (ব্যাংক কর্তৃপক্ষ) কাছে নাকি আমাদের আরও ১৩ লাখ টাকা ঋণ আছে। এত টাকা কীভাবে হয়। উনাদের কাছেই তো রশিদ থাকার কথা। কৃষকদের কাছ থেকে ১৫% সুদ কীভাবে তারা দাবি করেন?’

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ঈশ্বরদী উপজেলার ভাড়ইমারী গ্রামের ৪০ জন কৃষক ওই সমিতির নামে দলগত ঋণ হিসেবে ১৬ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। এর মধ্যে কেউ ২৫ হাজার, কেউ ৪০ হাজার টাকা করে ঋণ পান। দীর্ঘদিনেও সেই ঋণ ও সুদের টাকা পরিশোধ না করায় ২০২১ সালে ৩৭ জন কৃষকের নামে মামলা করে ব্যাংকটি। সম্প্রতি আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে গত ২৫শে নভেম্বর ১২ জন কৃষককে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।

বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর ব্যাপক আলোচনা, সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে গত ২৭শে নভেম্বর পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক (সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-২ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক) শামসুজ্জামান গ্রেপ্তার হওয়া ১২ জনসহ ৩৭ কৃষকের জামিন মঞ্জুর করেন। পরে কৃষকদের বিরুদ্ধে ঋণ সংক্রান্ত মামলা ও ঋণের কিস্তি নিয়ে জটিলতার বিষয়টি তদন্ত করতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক। ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক (পরিদর্শন ও আইন) আহসানুল গণির নেতৃত্বে কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (প্রকল্প ও ঋণ) আবদুর রাজ্জাক ও সহকারী মহাব্যবস্থাপক (আইন) আমিনুল ইসলাম।