পাবনার ঈশ্বরদীতে মুলার জমিতে ছিটিয়ে দেয়া বিষ খেয়ে ৫০টি পোষা কবুতর ও ৩টি ঘুঘু পাখির মৃত্যু হয়েছে। পাখির আক্রমণ ঠেকাতে জমির মালিক গমের সঙ্গে দানাদার বিষ মিশিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) ৩ টার সময় উপজেলার মানিকনগর মাঠপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, মানিকনগর পূর্বপাড়া গ্রামের ইছাহক বিশ্বাসের জমি লিজ নিয়ে জয়নগর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে সাহাবুল বিশ্বাস মুলার বীজ বপন করেছেন। ওই জমির মুলার বীজ কতবুর ও পাখি যে ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য মঙ্গলবার সকালে সাহাবুল জমিতে বিষ মেশানো গম ছিটিয়ে দেন। সকাল ১১টার পর কবুতর মুলার জমিতে বসে বিষ মাখানো গম খেয়ে মারা যাচ্ছে। প্রায় ৩০টি কবুতর মুলার ক্ষেতে মারা গেছে। আরো কিছু কবুতর বাড়ি ও আশপাশের গাছপালায় পড়ে মরে আছে।
মানিকনগর মাঠপাড়া এলাকার আমিরুল ইসলাম জানান, আমাদের বাড়ির পাশে মুলা চাষের জমিতে প্রায় ৩০টি কবুতর মরে পড়ে ছিল। এসব মরা কবুতর বেশ কয়েকটি কুকুর নিয়ে গেছে। আশপাশের লোকজন সরিয়ে নিয়ে গেছে। এখনো প্রায় ১২ থেকে ১৫টা পড়ে আছে। বাড়ির সামনে তিনটি ঘুঘু মরে পড়ে আছে। এছাড়াও অসংখ্য পাখি এ জমিতে বসে গম খেয়ে উড়ে গেছে। এসব পাখির মৃত্যু অবধারিত। হয়তো দূরের কোন গাছের নিচে এরা মরে পড়ে আছে। আমার জানা মতে আবুল কালামের ১৫টি, আম্বিয়া বেগমের ২০টি ও মতিয়ারের ১০টি কবুতর মারা গেছে। এছাড়াও আশপাশের কয়েকজনের একটি দুইটি করে কবুতর মারা গেছে বলে শোনা যাচ্ছে।
আবুল কালাম বলেন, আমার ১৫টি কবুতর মুলার জমিতে বিষ মাখানো গম খেয়ে মারা গেছে। এ ব্যাপারে জমির খাজনা চাষি সাহাবুল বিশ্বাসকে জানিয়েছি। তিনি বলেছেন, আমি এসে বিষয়টি দেখবো।
ক্ষতিগ্রস্ত আম্বিয়া বেগম বলেন, আমাদের ৩৫টি কবুতরের মধ্যে ২০টি কবুতর বিষ মাখানো গম খেয়ে মারা গেছে। এ জমিতে এর আগেও বিষ দিয়ে কবুতর মারা হয়েছে। এ বিষয়টির একটি সূরাহা হওয়া উচিত। কবুতর ও পাখির মৃত্যুর জন্য জমির চাষি দায়ী। আমি ক্ষতিপূরণসহ চাষির শাস্তি দাবি করছি।
অভিযুক্ত সাহাবুল বিশ্বাস বলেন, এ জমিতে এর আগেও মুলার বীজ বপন করেছিলাম কিন্তু পাখির অত্যাচারে সেসময় মুলার আবাদ হয়নি। এবার মুলা বপনের পরপরই বিষ দিয়েছি যেন পাখি মুলার কোন ক্ষতি করতে না পারে। আমি বুঝতে পারিনি এভাবে গণহারে কবুতর মারা যাবে। যাদের কবুতর মারা গেছে তাদের দুই একজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিকাল অথবা সন্ধ্যায় তাদের সঙ্গে দেখা করবো।
সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বাবলু মালিথা বলেন, কোন ফসলের জমিতে বিষ প্রয়োগ করতে হলে নিয়মানুযায়ী সে ফসলি জমির আশেপাশের বাড়ি-ঘরের মানুষদের জানাতে হবে এবং সে জমিতে লাল পতাকা টাঙাতে হবে। শুনেছি সাহাবুল জমিতে বিষ দিয়েছে কিন্তু এসব কোন নিয়ম কানুন মানেননি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, মুলা বপনের সময় বিষ দেয়ার কোন প্রয়োজন নেই। তিনি কেন বিষ দিয়েছে তা জানি না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তিনি যদি কবুতর ও পাখিকে মারার জন্য বিষ দিয়ে থাকেন তাহলে তিনি অন্যায় করেছেন। এরপর এ ধরনের কোন অভিযোগ পেলে কৃষি অফিস থেকে সে কৃষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।