জাতীয়

অর্থবিল পাশ : ন্যূনতম ২ হাজার টাকা আয়কর দেওয়ার প্রস্তাব বাতিল

  নিউজ ডেস্ক ২৬ জুন ২০২৩ , ১০:৫১:৫৪

জাতীয় সংসদে অর্থ বিল ২০২৩ পাস হয়েছে। এতে বহুল আলোচিত আয়কর রিটার্ন দাখিলে ন্যূনতম দুই হাজার টাকা কর দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এছাড়া ভ্রমণ কর ও পেট্রোলিয়াম জাতীয় পণ্যের শুল্ক কাঠামোয় পরিবর্তন এনে জাতীয় সংসদে অর্থবিল পাশ হয়েছে। রোববার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

এ সময় অর্থবিলের ওপর কয়েকজন সদস্য সংশোধনী প্রস্তাব দেন, যা অর্থমন্ত্রী গ্রহণ করেন। বাকিগুলো কণ্ঠভোটে বাতিল হয়ে যায়।

পরে তিনি অর্থবিল পাশের অনুরোধ জানালে স্পিকার তা ভোটে দেন। এ সময় উপস্থিত সদস্যদের কণ্ঠভোটে পাশ হয় অর্থবিল

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরসহ সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যরা আলোচনায় অংশ নেন।

দুই হাজার টাকা করের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তব্যে বলেছিলেন,‘এ বাজেট নিয়ে নানাবিধ আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন দিক থেকে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে, যা বাজেট বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে। এবারের বাজেটে মূল দর্শন হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্রেইন চাইল্ড সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। তাই আমরা বাজেটে প্রতিটি খাতে, প্রতিটি অংশে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনায় দেশের জনগণকে মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতা সম্প্রসারণ করেছি। বিভিন্ন ভাতার হার বৃদ্ধি করেছি, আমরা দেশের সাড়ে চার কোটি মানুষকে বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর মাঝে আনতে পেরেছি। প্রায় এক কোটি পরিবারকে বিনা মূল্যে বা স্বল্পমূল্যে আমরা খাদ্য বিতরণ করে যাচ্ছি। ’

রোববার সংসদে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ বাজেট নিয়ে নানাবিধ আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন দিক থেকে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে, যা বাজেট বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে। এবারের বাজেটে মূল দর্শন হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্রেইন চাইল্ড সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। তাই আমরা বাজেটে প্রতিটি খাতে, প্রতিটি অংশে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ’

১ জুন বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, রাষ্ট্রের একজন নাগরিকের অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্র কর্তৃক প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধার বিপরীতে সরকারকে ন্যূনতম কর প্রদান করে সরকারের জনসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ।

এ ধরনের অংশীদারিমূলক অংশগ্রহণ দেশের সক্ষম জনসাধারণের মাঝে সঞ্চারণের লক্ষ্যে করমুক্ত সীমার নিচে আয় রয়েছে। অথচ সরকার থেকে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্নের বাধ্যবাধকতা আছে, এমন করদাতাদের কাছ থেকে ন্যূনতম দুই হাজার টাকা কর আদায়ের প্রস্তাব করেন তিনি।

প্রস্তাবিত বাজেটে ৪৩টি সরকারি-বেসরকারি সেবা পেতে রিটার্ন জমার স্লিপ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ লাখ টাকার বেশি ঋণ নিলে, কোম্পানি পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার হলে, আমদানি-রপ্তানি নিবন্ধন সনদ (আইআরসি-ইআরসি) নিতে, সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিতে, সমবায় সমিতি নিবন্ধন নিতে, বিমা কোম্পানির সার্ভেয়ার হতে, ১০ লাখ টাকার বেশি মূল্যের জমি-ফ্ল্যাটের দলিল করতে, ক্রেডিট কার্ড নিতে, পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপদ নিতে, ড্রাগ লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিএসটিআই লাইসেন্স ও ছাড়পত্র পেতে; গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে বাচ্চা ভর্তি করতে, কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটরশিপ নিতে, অস্ত্রের লাইসেন্স নিতে, ব্যাংকে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে, ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে, নির্বাচনে অংশ নিতে, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ১৬ হাজার টাকা হলে, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ১৬ হাজার টাকার বেশি বেতন গ্রহণ করলে, পণ্য আমদানি-রপ্তানির বিল অব এন্ট্রি জমা দিতে রিটার্ন জমার স্লিপ বাধ্যতামূলক।