শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা আজ বুধবার (২২ মে)। ‘জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক’ এই অহিংস বাণীর প্রচারক গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম তিথিতে এ উৎসব পালন করেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা।
বুদ্ধপূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দের এই দিনে নেপালের লুম্বিনীর শালবনে জন্মগ্রহণ করেন বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক মহামতি গৌতম বুদ্ধ। ৫৮৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এই দিনে তিনি সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন। আবার ৫৪৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দের এ দিনেই তিনি মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। বুদ্ধের শুভজন্ম, বোধিজ্ঞান ও মহাপরিনির্বাণ লাভ এই তিন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর স্মৃতিবিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমা বিশ্বের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে বুদ্ধপূর্ণিমা হিসেবে পরিচিত।
বৌদ্ধ ধর্মমতে, গৌতম বুদ্ধের কাছে জাতি, শ্রেণি ও গোত্রের কোনো ভেদাভেদ ছিল না। তিনি মানুষকে মানুষ এবং প্রাণীকে প্রাণী রূপেই জানতেন।
শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ‘অসহিষ্ণু বিশ্বে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ, যুদ্ধ বিগ্রহ, ধর্ম-বর্ণ জাতিগত হানাহানি রোধ করে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহামতি বুদ্ধের দর্শন ও জীবনাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’ প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ‘হিংসায় উন্মত্ত পাশবিক শক্তিকে দমন ও শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে আজকের পৃথিবীতে বুদ্ধের শিক্ষা অনুসরণ করা প্রয়োজন।’
বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয় মহাথের দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে সাড়ে পাঁচ হাজারের মতো বৌদ্ধ বিহার রয়েছে। বুদ্ধপূর্ণিমায় বুদ্ধপূজাসহ পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্রপাঠ, সূত্রশ্রবণ, প্রদীপ প্রজ্বলন, শান্তি শোভাযাত্রা, ধর্মীয় আলোচনা হবে। মানবজাতির সর্বাঙ্গীণ শান্তি ও মঙ্গল কামনায় হবে বিশেষ প্রার্থনা। রাজধানীর মেরুল বাড্ডা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করা হবে। এ ছাড়া বাসাবোতে ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহার, উত্তরায় বাংলাদেশ বৌদ্ধ বিহারসহ সারা দেশের বিহারগুলোতে পূজার্চনা ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। দিনটি উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি থাকবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করবে বিশেষ ক্রোড়পত্র।
বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে আজ বঙ্গভবনে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে সংবর্ধনা ও ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি। অনুষ্ঠানে ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারাসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেবেন।