• Warning: Undefined property: WP_Error::$cat_ID in /home/shobujalo/public_html/wp-content/themes/jugantor/single.php on line 70
    Uncategorized

    সংগ্রামে টিকে আছেন চাটমোহরের শাঁখারীরা 

      প্রতিনিধি 14 November 2022 , 9:30:33

    0Shares

    রীতি অনুযায়ী সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীদের বিয়ের সাত পাকে বাঁধার সময় থেকে কপালে সিঁদুর হাতে শাখার ব্যবহার আদিকাল হতে চলে আসছে। স্বামীর মঙ্গলের জন্য আদিকাল হতে এখন পর্যন্ত সনাতন ধর্মের বিবাহিত নারীরা হাতে শাঁখা ব্যবহার করে আসছেন। বিয়ে হয়েছে অথচ হাতে শাঁখা নেই এমনটা কল্পনাতীত। তাই এর প্রয়োজন মেটাতে ও জীবিকার তাগিদের বংশ-পরম্পরায় পাবনার চাটমোহরের হান্ডিয়ালের ডেফলচড়া গ্রামে বাস করছেন শাঁখারীরা।

    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই গ্রামে এখনো ৩৭টি শাঁখারী পরিবারের বসবাস। এর মধ্যে শাঁখা শিল্পের সঙ্গে জড়িত ৩০টি পরিবার। বাকি পরিবারগুলো অন্য পেশায় চলে গেছে।

    এ গ্রামের শাঁখারী রাজকুমার সেন বলেন, ‘আমার পূর্বপুরুষেরাও এই পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ভারত থেকে প্রতিটি শঙ্খ ১ হাজার টাকা দিয়ে কিনে আনা হয়। সেটি থেকে তিন জোড়া শাখা তৈরি করা যায়। প্রকারভেদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফেরি করে প্রতি জোড়া শাখা ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা পর্যন্ত  বিক্রি হয়।

    শাঁখারী রাজকুমার সেন আরও বলেন, ডেফলচড়া গ্রামের অনেক শাঁখারী পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে গেছেন। গত দশ বছরে শঙ্খের দাম বেড়েছে তিন থেকে চার গুণ। শাখার দাম বেড়ে গেলেও ক্রেতারা বেশি দাম দিতে চান না। ফলে তাদের লোকসান গুনতে হয়।

    শাঁখারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি বেসরকারি ব্যাংক থেকে সহজ স্বত্বে ঋণ পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে ক্ষুদ্র শাঁখারীরা বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে অধিক সুদে ঋণ নেন। তার কিস্তি টানতে দিশেহারা হয়ে পড়েন। পরে ঋণের চাপে একসময় ব্যাবসা বাদ দিতে বাধ্য হন তাঁরা।

    একই গ্রামের হারাধন সেন বলেন, ‘একসময় শাখায় নক্সা তৈরি করে বিক্রি করতাম। টাকার অভাবে নিজে ব্যবসা বাদ দিয়েছি। এখন মজুরির বিনিময়ে মহাজনের কাজ করে দেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি যান্ত্রিক মোটরের সাহায্যে মহাজনের শাঁখার ফিনিশিংয়ের কাজ করি। পরে তারা সেই শাঁখায় নক্সা করে বিক্রি করে।’

    শাঁখারী বিকাশ কুমার ধরের সহধর্মিণী সিমা রানী বলেন, ‘আমার বিয়ের আগে বাবা মায়ের কাছে শাঁখায় নকশা করার কাজ শিখি। বিয়ের পরে স্বামীর বাড়িতে এসে এ কাজটিই করছি। সকাল থেকে রাত পয়ন্ত অন্য কাজ করার পাশাপাশি শাঁখায় নকশা করি। বিভিন্ন আকারের রেত দিয়ে ঘঁষে প্রতিদিন চিকন ৩০ থেকে ৩৫ জোড়া শাঁখায় নকশা আর মোটা শাখা হলে ১ দিনে ২৫ জোড়া নক্সা করতে পারি।