পাবনা

পেকিন হাঁসের খামার করে দারিদ্র্যকে জয় করেছেন মাছুরা 

  মাসুদ রানা, আটঘরিয়া (পাবনা) : ১৩ জুলাই ২০২৩ , ১০:৪৬:৫৯

পেকিন হাঁস

একদিকে স্বামীর সংসারের ঘানি আর অন্যদিকে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক নারী উদ্যোক্তা মাছুরা খাতুন।

স্বামী-সংসারের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে হাঁস পালন শুরু করে ক্রমেই আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছেন তিনি। তার এ প্রচেষ্টা দেখে বাড়তি আয়ের আশায় এলাকার অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন এই পেকিন বা বেইজিং জাতের হাঁস পালনে।

বিদেশী জাতের পেকিন হাঁসের খামার করে দারিদ্র্যকে জয় করেছেন পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের মাছুরা খাতুন।

পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) অর্থায়নে ও কারিগরি সহযোগিতায় ৪২টি পেকিন হাঁসের বাচ্চা নিয়ে খামার শুরু করেন মাছুরা। তিনি  দেবোত্তর শাখা থেকে হাঁস পালন বিষয়ক প্রশিক্ষণ নেন। পেকিন হাঁস ব্রয়লার টাইপ, ৬০-৭০ দিনে প্রায় দুই/আড়াই কেজি ওজন হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মুনসুর আলী বলেন, পেকিন জাতের হাঁস দেখতে যেমন সুন্দর, তেমন অল্পসময়ে বড় হয়, অন্য হাঁসের চেয়ে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব। আমিও  পেকিন জাতের হাঁস পালন করতে চাই।

খামারী আনিসুর রহমান বলেন, জাগরণী ফাউন্ডেশন থেকে আমাকে পেকিন জাতের হাঁসের বাচ্চা, ফিড, মাচাসহ হাঁস পালন পালন করার জন্য দেয়। হাঁস গুলো দেখতে খুব সুন্দর, ৩-৪ কেজি ওজন হয়। আমি আশা করি এই পেকিন জাতের হাঁস পালন করে লাভবান হবো।

প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম বলেন, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন পিকেএসএফ আর্থিক সহযোগিতায় সমন্বিত কৃষি ইউনিটের আওতায় প্রধানত তিনটি সেকশনে কাজ করে থাকে। কৃষি ইউনিট, প্রানী সম্পদ ইউনিট ও মৎস্য ইউনিট।

তবে রামচন্দ্রপুর গ্রামে জীম মহিলা সমিতির সদস্য মাসুরা খাতুনকে প্রাণি সম্পদ ইউনিটের আওতায় পেকিন জাতের হাঁস পালন করতে সহায়তা করছি।

তবে হাঁস পালন করতে আমরা ফিড সহ খামারীদের সহযোগিতা করছি। আগামীতে পেকিন জাতের হাঁস পালন করে লাভবান হবে এই খামারি।

পাবনা জোনাল ম্যানেজার জয়নাল আবেদীন বলেন, পল্লী সহায়ক ফাউন্ডেশন এর আওতায় কৃষি সমন্বিত ইউনিট জাগরনি চক্র ফাউন্ডেশন প্রাণি সম্পদ ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে পাবনা জেলার তিনটি উপজেলায় কাজ করছে।

সদর পাবনা,আটঘরিয়া, ঈশ্বরদী উপজেলায়। এই তিনটি উপজেলার সদস্যদের মাঝে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি জাগরনি চক্র ফাউন্ডেশন প্রানি সম্পদের আওতায় উপকরণ সামগ্রী পেকিন জাতের হাঁসের বাচ্চা, মুরগির বাচ্চা লালন পালন করে লাভবান হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সদস্যদের মাঝে পাঠা এবং ছাগল বিতরন করে থাকি। তাদেরকে বিভিন্ন ট্রেডের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এতে সদস্যরা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে উপকৃত হচ্ছে এবং আধুনিক প্রযুক্তি এই চাষে তারা স্বাস্থ্য সম্মত মাচা পদ্ধতিতে হাঁস পালন এবং মুরগী পালন করে একদিকে যেমন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে এবং খামারিরাও লাভবান হচ্ছ বলে মনে করছেন এই কর্মকর্তা।

মাছুরা খাতুন দম্পতির সাথে কথা হলে তারা বলেন, বড় পরিসরে পেকিন জাতের হাঁসের খামার ও বাচ্চা সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য খামার গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন তারা।