খেলাধুলা

বড় হার দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করল টাইগাররা

  সবুজ আলো ডেস্ক ১১ নভেম্বর ২০২৩ , ৯:১৮:৪৯

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করল বাংলাদেশ। ৩০৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৮ উইকেট ও ৩২ বল হাতে রেখেই জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপে মোট ৯ ম্যাচে মাত্র দুটিতে জয় পেয়েছে টাইগাররা।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই হোঁচট খায় অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ট্রাভিস হেডকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। ১০ রান করে এই ওপেনার ফেরায় ভাঙে ১২ রানের উদ্বোধনী জুটি। পরে শুরুর ধাক্কা বেশ ভালোভাবেই সামলেছেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ। তারা দুজনে যোগ করেন ১১৬ বলে ১২০ রান। তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় অজিরা। তবে ২৩তম ওভারে ৫৩ রান করা ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজ।

পরে মার্শকে অপর প্রান্ত থেকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন স্টিভেন স্মিথ। শেষ পর্যন্ত ১৩২ বলে ১৭৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন মার্শ। আর ৬৪ বলে অপরাজিত ৬৩ রান করে মাঠ ছেড়েছেন স্মিথ। চতুর্থ উইকেটে তাদের অবিচ্ছিন্ন ১৭৫ রানের জুটিতে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া।

এর আগে, পুনেতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পায় বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে দেখে-শুনে শুরু করেছিলেন দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম-লিটন দাস। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তারা। দুই ওপেনারের দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রথম পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬২ রান তুলে বাংলাদেশ।

৩৬ রান করে তামিম ফেরায় ভাঙে ৭৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। তামিমের বিদায় রান রেটে কোনো প্রভাব ফেলেনি। কারণ উইকেটে এসেই শট খেলতে শুরু করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাতে দলের রানের গতিও বাড়ে। প্রথম ৫০ রান করতে লেগেছিল ৫০ বল, পরের ৫০ রান এসেছে ৪২ বলে, সবমিলিয়ে ৯২ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছে বাংলাদেশ।

শুরুটা ভালো হলেও আরও একবার হঠাৎ ছন্দ পতন লিটনের। সবলীল ব্যাটিংয়ে ফিফটি পথে এগোচ্ছিলেন। কিন্তু ১৭তম ওভারে অ্যাডাম জাম্পাকে উড়িয়ে মারতে গেলেন। এতে লং অনে ল্যাবুশেনের হাতে ধরা পড়েন এই ওপেনার। সাজঘরে ফেরার আগে লিটনের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৫ বলে ৩৬ রান।

এরপর তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের জুটিতে ভর করে বড় রানের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু তার শেষটাও হয় হতাশায়। ২৮তম ওভারের পঞ্চম বল স্কয়ার লেগ অঞ্চলে ঠেলে দিয়ে দৌড় শুরু করেন শান্ত ও হৃদয়। দুজন বেশ কিছুক্ষণ ধরেই রান নেওয়ার জন্য বেশ তাড়াহুড়ো করছিলেন।

ওই বলটিতে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে আউট হন শান্ত। স্কয়ার লেগ থেকে করা লাবুশেনের দারুণ থ্রোতে দ্রুত স্টাম্প ভাঙেন উইকেটরক্ষক জশ ইংলিশ। ৬ চারে ৫৭ বলে ৪৫ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় শান্তকে। এরপর হৃদয়ের জুটির সঙ্গী হন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তাদের জুটিতে ৪৪ রান আসে। এবারও সেই রান আউটে শেষ হয় জুটি, লাবুশেন থাকেন এখানেও। হৃদয় বল কাভারে পাঠান, এরপর রানের জন্য দৌড় শুরু করেন দুজন। ১ চার ও ৩ ছক্কায় ২৮ বলে ৩২ রান করেন রিয়াদ।

মুশফিকুর রহিমও ইনিংস টেনে নিতে পারেননি খুব বেশি দূর। ২৪ বলে ১ ছক্কায় ২১ রান করেন তিনি। অনেক্ষণ ক্রিজে থাকা হৃদয়ও ইনিংস শেষ করতে পারেননি। শুরুতে বলের চেয়ে বেশি রান করা এই ব্যাটার পরে স্ট্রাইক রেটও একশোর নিচে নিয়ে আসেন। বিশ্বকাপে তার প্রথম হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস থামে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৭৯ বলে ৭৪ রান করে। স্টয়নিসের বলে লাবুশেনের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।

এরপর ব্যক্তিগত ২৯ রানে থামেন সাতে নামা মেহেদী হাসান মিরাজ। শেষদিকে আরেক রানআউটের শিকার হন নাসুম আহমেদ (৭)। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৬ রান তোলে বাংলাদেশ।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে শন অ্যাবট ও অ্যাডাম জাম্পা পান ২টি করে উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ৪৪.৪ ওভারে ৩০৭/২, লক্ষ্য ৩০৭ (মিচেল মার্শ ১৭৭*, স্টিভেন স্মিথ ৬৩*; ট্রাভিস হেড ১০, ডেভিড ওয়ার্নার ৫৩)

বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ৩০৬/৮ (শেখ মেহেদী ২*, তাসকিন ০*; তানজিদ ৩৬, লিটন ৩৬, শান্ত ৪৫, মাহমুদউল্লাহ ৩২, মুশফিক ২১, তাওহীদ ৭৪, মিরাজ ২৯, নাসুম ৭)